Skip to main content

যাকাতে ফিতরা

*🌹 যাকাতে ফিতরা 🌹*

নবীজীর সুন্নত এক সা' (৩ কেজি)
আর মু'আবিয়ার সুন্নত অর্ধ সা' (১ কেজি ৫০০ গ্রাম)

এবার আপনি কার সুন্নত মেনে চলবেন নবীজীর নাকি মু'আবিয়ার? 


গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ২৪/ যাকাত (كتاب الزكاة)
হাদিস নম্বরঃ ১৫০৪

২৪/৭১. মুসলিমদের গোলাম ও আমাদের উপর সদাকাতুল ফিতর প্রযোজ্য। 

১৫০৪ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মুসলিমদের প্রত্যেক আযাদ, গোলাম পুরুষ ও নারীর পক্ষ হতে সদাকাতুল ফিতরা হিসেবে খেজুর অথবা যব-এর এক সা‘ পরিমাণ [৩ কেজি] আদায় করা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ করেছেন। (১৫০৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪১৩)

[1] সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্য থেকে এক সা‘ পরিমাণ (৩ কেজি) ফিতরা দিতে হবে। এটাই বিভিন্ন সহীহ হাদীসের দাবী এবং নাবী (সাঃ) ও ৪ খলীফাহর যুগের বাস্তব আমল। 
মু‘আবিয়া (রাঃ) তাঁর খিলাফতকালে যখন আসলেন এবং সেখানে গম আমদানী হল তখন তিনি বললেন, আমার মতে গমের এক মুদ (অন্য বস্তুর) দু’ মুদের সমান। তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে। 
فعدل الناس إلى نصف صاع من بر অর্থাৎ লোকেরা গমের অর্ধ সা‘ এর সাথে অন্য বস্তুর এক সা‘ এর সমান হিসাব করলেন। অতএব বুঝা গেল এক সা‘ (৩ কেজি) খেজুর, কিসমিস, পনির, যব এবং অন্য খাদ্য দ্রব্যের যে মূল্য ছিল সে পরিমাণ মূল্য ছিল অর্ধ সা‘ (১,৫০০)  গমের। 

সে কারণে মু‘আবিয়া (রাঃ) অর্ধ সা‘ (১কেজি ৫০০ গ্রাম) ফিতরাহ আদায়ের ফাতাওয়া দিলেন। 
কিন্তু সহাবীদের অধিকাংশই তাঁর প্রতিবাদ করেছেন। 
যেমন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) প্রতিবাদ করে বললেনঃ
 فأما أنا فلا أزال أخرجه كما كنت أخرجه أبدا ما عشت رواه مسلم
 আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন সর্বদা ঐভাবেই ফিতরা আদায় করব যেভাবে আগে আদায় করতাম। (মুসলিম ১ম খন্ড ৩১৮ পৃষ্ঠা) 
ইমাম হাকিম ও ইবনু খুজাইমাহ সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, عن عياض بن عبد الله بن سعد بن أبي سريح قال : قال أبو سعيد و ذكر عنده صدقة الفطر فقال : لا أخرج إلا ما كنت أخرجه على عهد رسول الله صلى الله عليه و سلم صاعا من تمر أو صاعا من حنطة أو صاعا من شعير أو صاعا من إقط فقال له رجل من القوم : أو مدين من قمح فقال : لا تلك قيمة معاوية لا أقبلها و لا أعمل بها ‘আইয়ায বিন ‘আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তার নিকট রমাযানের সদাকাহ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলে তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যামানায় যে পরিমাণ সদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম তা ব্যতীত অন্যভাবে বের করব না। 
এক সা‘ (৩ কেজি) খেজুর, এক সা‘ (৩ কেজি) গম, এক সা‘ (৩ কেজি) যব ও এক সা‘ (৩ কেজি) পনির। 

কোন এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, গমের দু’ মুদ দ্বারা কি আদায় হবে না? তিনি বললেন, না। এটা মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর মনগড়া নির্ধারিত। আমি সেটা গ্রহণও করব না বাস্তবায়নও করব না। (ফাতহুল বারী ৩য় খন্ড ৪৩৭ পৃষ্ঠা) 

ইমাম নাববী (রহঃ) বলেন, যারা মু‘আবিয়ার কথা মত গমের দু’ মুদ আদায় করাকে গ্রহণ করেছে তাতে ত্রুটি রয়েছে। কেননা এ ব্যাপারে সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) এবং অন্যান্য সাহাবাগণ বিরোধিতা করেছেন যাঁরা দীর্ঘ সময় নাবী (সাঃ) এর সাথে ছিলেন এবং তাঁরা নাবী (সাঃ) এর অবস্থা সম্পর্কে অধিক অবগত ছিলেন। মু‘আবিয়া (রাঃ) নিজের রায় দ্বারা মত ব্যক্ত করেছেন। তিনি নবী (সাঃ) হতে শুনে বলেননি। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর হাদীসে ইত্তিবাহ ও সুন্নাত গ্রহণের প্রতি অত্যধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। (ফাতহুল বারী ৩য় খন্ড ৪৩৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম শরহে নাববী ১ম খন্ড ৩১৭-৩১৮ পৃষ্ঠা, শরহুল মুহাযযাব ইমাম নাববী) 
ইমাম শাফিয়ী, আহমাদ, ইসহাক এক সা‘ (৩ কেজি) ফিতরায় হাদীস প্রমাণ পেশ করেন। কেননা নবী (সাঃ) সদাকাতুল ফিতর খাদ্যদ্রব্যের এক সা‘ (৩ কেজি) আদায় করা ফরয করেছেন। আর গম হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যেরই একটি। অতএব এক সা‘ ব্যতীত ফিতরা আদায় বৈধ হবে না। আর আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ), আবুল আলিয়া, আবুশ শা’সআ, হাসান বাসরী, জাবির বিন যায়িদ, ইমাম শাফিয়ী, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ও ইসহাক (রহ.) প্রমুখ এ দলীল গ্রহণ করেছেন। নাইলুল আওতারে এভাবেই রয়েছে। তাতে আরো রয়েছে গম ও অন্য খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে পার্থক্য করা যাবে না। আর যারা অর্ধ সা‘ গমের কথা যে হাদীসগুলির দ্বারা বলে তা সম্পূর্ণ যঈফ।
(তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৩য় খন্ড, ২৮০-২৮১ পৃষ্ঠা) 
এ বিষয়ে সকল হাদীস পর্যালোচনা করে দেখা যায় মু‘আবিয়া (রাঃ) যখন মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন, হাজ্জ মৌসুমে হাজ্জ করে যখন লোকদের সাথে কথা বললেন তখন জানতে পারলেন শাম বা সিরিয়ার এক মুদ গমের যে দাম হিজাযের দু’ মুদ খেজুর, কিসমিস ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের একই দাম অথবা যখন হিজাযে গম আমদানী হল তখন দেখা গেল এক সা‘ খেজুর বা কিসমিসের মূল্য অর্ধ সা‘ গমের মূল্যের সমান। তাই মু‘আবিয়া (রাঃ) দামের দিক দিয়ে সমান করে দুই মুদ বা অর্ধ সা‘ গম আদায়ের কথা বলেন এবং সাহাবাদের প্রতিবাদের মুখে পড়েন। বর্তমানে যদি কেউ মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর কথা মানতে চায় তাহলে তার কথাকে বর্তমান সময়ের দ্রব্যমূল্যের সাথে তুলনা করে মানতে হবে। মাক্কাহ মাদীনার পরিমাপ হিসাবে এক সা‘-এর ওজন হয় বর্তমানে দুই কেজি একশত বাহা গ্রাম। যদি নিম্ন মানের খেজুরের দাম ধরা হয় তাহলে ৩০ টাকা দরে প্রায় ৩ কেজি খেজুরের মূল্য আসে ৬৫ টাকা। 
যেহেতু মু‘আবিয়া -এর সময় খেজুরের তুলনায় গমের দাম বেশী ছিল তাই অর্ধ সা‘ আদায় করার কথা তিনি বলেছেন। কিন্তু বর্তমানে গমের দ্বারা ফিতরা আদায় করতে হলে ৬৫ টাকার গম দিতে হবে। বর্তমানে প্রতি কেজি গমের মূল্য ১০ টাকা ধরলে মাথাপিছু সাড়ে ছয় কেজি গম দিতে ফিতরা আদায় করতে হবে। নচেৎ নাবী (সাঃ) যে এক সা‘র (প্রায় ৩কেজির সমান) কথা বলেছেন সেই পরিমাণ আপন আপন খাদ্যদ্রব্য দিয়ে আদায় করতে হবে। রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যামানায় দীনার, দিরহাম ইত্যাদি মুদ্রা চালু ছিল। কিন্তু দীনার দিরহামের দ্বারা অর্থাৎ আমাদের যামানায় প্রচলিত টাকা পয়সার দ্বারা যাকাতুল ফিতর আদায় করার প্রমাণ কোন হাদীসেই পাওয়া যায় না। তাঁরা তাঁদের খাদ্যবস্তু দিয়েই ফিতরা আদায় করতেন। আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর এ ব্যবস্থাপনায় বহুবিধ কল্যাণ নিহিত আছে। ফিতরাহ দানকারী যখন ফিতরার খাদ্যবস্তু কিনে তখন বিক্রেতা উপকৃত হয়। ফিতরাহ গ্রহণকারী খাদ্যবস্তু বিক্রি করে দিলে ফিতরাহ গ্রহণ করে না এমন সব গরীব ক্রেতা উপকৃত হয়। والله أعلم
15th June 2018
17:11

Comments

Popular posts from this blog

মুয়াবিয়ার সংক্ষিপ্ত বংশ পরিচয় ........................................... মুয়াবিয়া ছিলেন আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দার জারজ সন্তান । আবু সুফিয়ানের সাথে হিন্দার বিবাহের তিন মাস পরে মুয়াবিয়া জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর মাতা হিন্দা ছিলেন একজন ‘বেশ্যা’ । উর্দুভাষী একাধিক ঐতিহাসিক, হিন্দার চারিত্রীক বর্ণনায় ‘বেশ্যা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । অন্যান্য সূত্রানুযায়ী হিন্দা, বেশ্যা না হলেও তিনি যে বহু-পুরুষগামী মহিলা ছিলেন এবং মুয়াবিয়া যে তার জারজ সন্তান তার কিছু প্রমাণ পাওয়া যায় হজরত হাসান (রাঃ) ও হজরত আয়েশার (রাঃ) উক্তিতে । শাম ইবনে মুহাম্মদ কালভি (রঃ) তাঁর ‘কেতাবে মোসাব’ বইয়ে লেখেন- ‘হজরত হাসান (রাঃ) একদিন ব্যঙ্গ করে মুয়াবিয়াকে বলেন, তোমার কি মনে আছে তোমার আসল পিতা কে? মুয়াবিয়া কর্তৃক হজরত আয়েশার ভাই মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর খুন হওয়ার সংবাদ পেয়ে আবু সুফিয়ানের মেয়ে উম্মে হাবিবা (মুয়াবিয়ার বোন ও নবীজির স্ত্রী) আয়েশাকে শান্তনা দেয়ার জন্য একটি ছাগল রান্না করে পাঠিয়ে দেন । আয়েশা জিজ্ঞেস করেন, ‘এর অর্থটা কি?’ উত্তরে উম্মে হাবিবা বললেন, ‘উসমান হত্যার প্রতিদানে , তোমার ভাই

*কাগজ কলম দিলেন না*

*কাগজ কলম দিলেন না*       বোখারীতে আছে আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মাদ সঃকে হযরত উমার সাহেব কাগজ কলম দিলেন না ৷ উনি বললেনঃ নবী হিজিয়ান বকছেন, অর্থাৎ ভুল বকছেন ৷  অথচ রাসুলের (সাঃ) ইন্তেকালের পরে হযরত আবু বকরের একান্ত ব্যক্তিগত কাগজ কলেমের ওসিয়ত মোতাবেক হযরত ওমর দ্বিতীয় খলীফা পদে টুপ করে বসে পড়লেন । দ্বিতীয় খলীফা  হযরত ওমর রাসুলের (সাঃ) পবিত্র মিম্বরে বসে পড়লেন । একদিনের সংক্ষিপ্ত ঘটনা ---- আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) সন্তান তৃতীয় ইমাম হযরত হোসেন (আঃ) মিম্বরের উপর দিকে উঠে হযরত ওমরকে বললেন ,  *" ---- নেমে আসুন ! এটা আমার পিতার বসার মিম্বর  -----” ।*      (যারা আজ হুসাইন, হুসাইন করছেন বা হুসাইন জিন্দাবাদ বা নারা লাগাচ্ছেন ....তাদের উচিত হবে ইমাম হুসাইনের সেই সুন্নাতি প্রতিবাদী স্বরূপ তুলে ধরা ৷ কারণ হুসাইনের মা জননী আমৃত্যু হযরত উমার বা হযরত আবু বকরের সাথে কথা বলেন নি ৷  বোখারী খুলে দেখেনিন ৷  বোখারী স্পষ্ট লিখেছেন ৷ এমনকি বোখারী বলছেঃ  ফাতিমা রেগে গেলে বা ফাতিমা কষ্ট পেলে আল্লাহর রসুল রেগে যান, বা আল্লাহ রেগে যান ৷ ফাতিমা কষ্ট পেলে আল্লাহর রসুল কষ্ট পান, বা আল্লাহ কষ্ট পান ৷    *আ

خون کا پرسہ

🌹🌹خون کا پرسہ🌹🌹 یعنی زنجیر زنی یا قمع زنی کوئی 42 سال قبل ایک دوست نے کہا  یار تم زنجیر زنی سے جو خون کپڑوں یا سڑکوں پر گراتے ھو، اگر وہ خون کسی بلڈ بینک میں دو تو اس سے کسی انسان کی جان بچ سکتی ھے- میرے   3 جوابات تھے  اگر خون بنک میں دنے سے صواب ہوتاہے تو قربانی ولاے پسے یتم کودو 💖🌺اگر تو کربلا میں میرے کریم مولا، ان کے اعزاء اور انصار (علیہم الصلواۃ والسلام) کا خون سوئی چبھنے سے بہا تھا تو ہم بھی سوئی چبھو کر خون نکلوا لیتے۔ مگر وہاں تو لاتعداد زخم لگے تھے ۔ اس لئے ہم بھی اپنے جسموں پر زخم لگاتے ھیں۔ ھم خون نکالنے کے لئے نہیں بلکہ خود کو زخمی کرنے کے لئے زنجیر زنی یا قمع زنی کرتے ھیں۔ 💖🌺ماتمی کا خون بظاہر کپڑوں اور راستوں پر گرتا ھے مگر حقیقت میں یہ خون کربلا کی رگوں میں چلا جاتا ھے اور اس سے کربلا زندہ رھتی ھے۔  یاد رھے ! جب تک کربلا زندہ ھے ، تب تک اسلام زندہ ھے۔ اور جب تک اسلام زندہ ھے تب تک ولایت مطلقہ الہیہ یعنی توحید و رسالت و امامت زندہ ھے۔ اسی لئے کربلا کو زندہ فرمانے کے لئے سب سے پہلے خون کا پرسہ خود مولا کریم کربلا ص کی بھائیوال بہن (ص) نے ب