মুয়াবিয়ার সংক্ষিপ্ত বংশ পরিচয়
...........................................
মুয়াবিয়া ছিলেন আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দার জারজ সন্তান । আবু সুফিয়ানের সাথে হিন্দার বিবাহের তিন মাস পরে মুয়াবিয়া জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর মাতা হিন্দা ছিলেন একজন ‘বেশ্যা’ । উর্দুভাষী একাধিক ঐতিহাসিক, হিন্দার চারিত্রীক বর্ণনায় ‘বেশ্যা’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । অন্যান্য সূত্রানুযায়ী হিন্দা, বেশ্যা না হলেও তিনি যে বহু-পুরুষগামী মহিলা ছিলেন এবং মুয়াবিয়া যে তার জারজ সন্তান তার কিছু প্রমাণ পাওয়া যায় হজরত হাসান (রাঃ) ও হজরত আয়েশার (রাঃ) উক্তিতে । শাম ইবনে মুহাম্মদ কালভি (রঃ) তাঁর ‘কেতাবে মোসাব’ বইয়ে লেখেন- ‘হজরত হাসান (রাঃ) একদিন ব্যঙ্গ করে মুয়াবিয়াকে বলেন, তোমার কি মনে আছে তোমার আসল পিতা কে? মুয়াবিয়া কর্তৃক হজরত আয়েশার ভাই মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর খুন হওয়ার সংবাদ পেয়ে আবু সুফিয়ানের মেয়ে উম্মে হাবিবা (মুয়াবিয়ার বোন ও নবীজির স্ত্রী) আয়েশাকে শান্তনা দেয়ার জন্য একটি ছাগল রান্না করে পাঠিয়ে দেন । আয়েশা জিজ্ঞেস করেন, ‘এর অর্থটা কি?’ উত্তরে উম্মে হাবিবা বললেন, ‘উসমান হত্যার প্রতিদানে , তোমার ভাই উসমানকে খুন করেছিল’ । আয়েশা অভিশাপ দিয়ে বলেন- ‘বহু-পুরুষগামী হিন্দার মেয়ের ওপর আল্লাহর গজব বর্ষিত হোক’। এর পরে আয়েশা যতোদিন জীবিত ছিলেন, উম্মে হাবিবা ও তাঁর মা হিন্দাকে নামাজ শেষে অভিশাপ দিয়েছেন । হিন্দা ইসলামের ইতিহাসে নবীজির চাচা হজরত হামজার (রাঃ) কলিজা ভক্ষণকারী বলেও পরিচিত! ‘নাহজুল বালাগা’ (ভলিউম ১০, পৃষ্ঠা ১৩০) থেকে উদ্ধৃত, মুয়াবিয়ার জন্মদাতা হিসেবে সম্ভাব্য চারজন পিতার নাম লোকমুখে শুনা যায়; তারা হলেন : আবি ইবনে ওমর বিন মুসাফির, ওমর বিন ওলিদ, আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব এবং সাবাহ (এক ইথোপিয়ান কৃষ্ণাঙ্গ)। একই বক্তব্য পাওয়া যায় ‘রাবিউল আবরার’ (ভলিউম ৩, পৃষ্ঠা ৫৫১) কেতাবে আল্লামা হজরত জামাক্শারির লেখায় । আবু সুফিয়ানের, উৎবা নামে সর্বজন স্বীকৃত আরেকজন জারজ সন্তান ছিলেন , সুতরাং নিঃসন্দেহে এটা বলার অপেক্ষাই রাখে না যে , বিয়ের আগে আবু সুফিয়ানের সাথে হিন্দার অবৈধ দৈহিক সম্পর্কের ফসল জারজ সন্তান মুয়াবিয়া ।
Comments